রায় নিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগ : মির্জা ফখরুল

রায় নিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগ : মির্জা ফখরুল

‘দেশে একটা মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আগামীকাল ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে যেটা ট্রায়াল হয়েছে তার রায় বেরুবে। এই নিয়ে একটা চরম আপনার বলা যেতে পারে যে একটা অনিশ্চয়তা, একটা আতঙ্ক সারাদেশে বিরাজ করছে… এটা বলার কোন অপেক্ষা রাখে না। একটা মহল এটা নিয়ে বাংলাদেশে আবার একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য পায়তারা করছে।”

‘‘এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ আমরা পেয়েছি সেই সুযোগ যেন আমরা নষ্ট না করি এবং গণতন্ত্রের উত্তোরণের পথকে যেন আমরা আরো সহজ করে তুলি সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।”

‘‘ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আসুন যে, আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করব.. প্রশ্নে  ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাই। মওলানা ভাসানীর যে আদর্শ সেই আদর্শকে সামনে রেখে আমরা যেন এখানে(বাংলাদেশে) গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। “

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিএনপির গঠিত মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালনে জাতীয় কমিটির উদ্যোগে মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। 

জাতীয় কমিটির দুইদিনের কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার টাংগাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত, শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও আলোচনা সভা হবে।

মওলানা ভাসানীর জীবনাদর্শ বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনুসরণ করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘দেশের বিভ্রান্তির রাজনীতি চলছে’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে বাংলাদেশের রাজনীতি একটা বিভ্রান্ত অবস্থার মধ্যে চলে যাচ্ছে…  কনফিউজ পলিটিক্স। এমন এমন জিনিস এখানে এসে ঢুকছে যেটা বাংলাদেশের মানুষ চিন্তাই করতে পারে না…. যেটা বাংলাদেশের সোল নয় আত্মা নয়।”

‘‘ আজকে দুর্ভাগ্যক্রমে এই বর্তমান সময়টা অত্যন্ত একটা জটিল সংকট অবস্থায় উপস্থিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ভরসা নিয়ে আমরা বিএনপি ১৬  বছর লড়াই করেছি ফ্যাসিদের বিরুদ্ধে,, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে-মিথ্যা মামলা হয়েছে-নিহত হয়েছে-শহীদ হয়েছে। আমরা আজকে ছাত্র-জনতার একটা অভ্যুত্থান হয়েছে…. সেই অবস্থাটাকে, মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষাটাকে মানুষের চাওয়াটাকে কিন্তু আমরা সঠিকভাবে ধরতে পারছি না।”

‘অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গে’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আজকে এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের সকলের সমর্থন তারা এসেছে। তারা চেষ্টা করেছে যে রাজনৈতিক কাঠামোটাকে একটা জায়গায় নিয়ে আসার।  কিন্তু সেটা কতদূর এই জনগণের আশাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তার সামঞ্জস্য থাকছে সেটা কিন্তু এখনো বলার সময় আসেনি।”

‘‘ আমরা বারবার বলেছি যে, নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ যা দিয়ে একটা ট্রানজিশন  টু ডেমোক্রেসি, গণতন্ত্রে আমরা যেতে পারব এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সেখানে আমরা প্রতিফলিত করবার চেষ্টা করতে পারব।”

‘কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চায়’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘  অনেকটা বিভ্রান্তি, অনেকটা হতাশা এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েও কিন্তু এই নির্বাচনের এখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে,  ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে কিছু গোষ্ঠী, কিছু মহল আজকে পরিকল্পিতভাবে এই বাংলাদেশে একটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চায় এবং তারা বিভিন্ন রকম দাবি তুলে নির্বাচনকে ব্যাহত করতে চায়, বিলম্বিত করতে চায়।”

‘‘ এই দেশের মানুষের এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যেটা সেটা হচ্ছে একটা নির্বাচিত সরকার যার পেছনে জনগণ থাকবে। আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান জানাব, আর কাল বিলম্ব না করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে এই দেশের মানুষের যে মত ও বিশ্বাস এখানে এই নির্বাচন অবশ্যই অনুষ্ঠিত করে মানুষের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ দেশের  অর্থনীতির অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে…. নির্বাচিত সরকার না থাকলে এটা আরো খারাপ হবে।”

‘‘ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ হচ্ছে… নির্বাচিত সরকার না থাকলে এটা খুবই খারাপ হবে।”

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে  ও  এসকে সাদীর সঞ্চালনায় আলোচনা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ,বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, জাসাসের হেলাল খান, কৃষক দলের তকদীর হোসেন মো. জসিম  প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।